| সুন্নতি দাঁড়ি রয়েছে কি? |
হ্যাঁ, আলহামদুলিল্লাহ |
| পায়ের টাখনুর উপরে কাপড় পরেন? |
হ্যাঁ, আলহামদুলিল্লাহ |
| প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া হয় ? |
হ্যাঁ, আলহামদুলিল্লাহ |
| নিয়মিত নামায কত সময় যাবত পড়ছেন? |
আলহামদুলিল্লাহ, ইসলামগ্রহণের পর থেকে। ৫ই এপ্রিল,২০২২। |
| মাহরাম/গাইরে-মাহরাম মেনে চলেন কি? |
চেষ্টা করি। |
| শুদ্ধভাবে কুরআন তিলওয়াত করতে পারেন? |
না। কুরআন শিক্ষা চলমান। |
| ঘরের বাহিরে সাধারণত কী ধরণের পোশাক পরেন? |
জুব্বা,পাঞ্জাবি, পায়জামা,টুপি |
| কোনো রাজনৈতিক দর্শন থাকলে লিখুন |
নাই |
| নাটক/সিনেমা/সিরিয়াল/গান/খেলা এসব দেখেন বা শুনেন? |
দেখি না। |
| মানসিক বা শারীরিক কোনো রোগ আছে কি? |
না, আলহামদুলিল্লাহ |
| দ্বীনের কোন বিশেষ মেহনতে যুক্ত আছেন? |
বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের তাবলীগী ভাইদের সাথে নিয়মিত তালিম,গাস্ত এবং সময় লাগানো হয়। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে বন্ধু-বান্ধব এবং পরিচিতজনদের দাওয়াত দেওয়া হয়। |
| আপনি কি কোনো পীরের মুরিদ বা অনুসারী ? |
না। |
| মাজার সম্পর্কে আপনার ধারণা বা বিশ্বাস কি? |
মাজার একটি কবর। যেখানে শ্রদ্ধা-ভক্তি, সেজদাহ করা শিরক। |
| আপনার পছন্দের অন্তত ৩ টি ইসলামী বই এর নাম লিখুন |
আর-রাহীকুল মাখতুম,বেলা ফুরাবার আগে,রাহে বেলায়েত। |
| আপনার পছন্দের অন্তত ৩ জন আলেমের নাম লিখুন |
শাইখ খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহিমাহুল্লাহ,শাইখ আহমদুল্লাহ,শাইখ মুফতি মনোয়ার হোসেন(বগুড়া) |
| বিশেষ দ্বীনি বা দুনিয়াবি যোগ্যতা (যদি থাকে) |
তেমন কোনো যোগ্যতা নাই। তবে ইলমের সন্ধানে আছি, আলহামদুলিল্লাহ। |
| নিজের সম্পর্কে কিছু লিখুন |
আমি একজন নওমুসলিম। পরিবার থেকে বিতাড়িত। আমার জীবন নিয়ে বলার কিছু নাই। আমি মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার আমার মতো এক অধমকে নর্দমা থেকে তুলে এনে হেদায়েতের নূরে আলোকিত করেছেন। এই যাত্রাটা ছিল সত্যিই খুব সুন্দর। এইটাই তুলে ধরলাম, আমি যখম পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তাম তখন হিন্দু ধর্মের পরিবর্তে আমি ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বই পড়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ২০১৪-তে অংশগ্রহণ করি। সেখান থেকেই আমার ইসলাম সম্পর্কে জানার সুত্রপাত।আমার গ্রামের প্রায় সবাই মুসলিম। তাই মুসলিম সমাজেই আমি বেড়ে উঠি,ছোটোবেলা-কৈশোর কাটে মুসলিম বন্ধুদের সাথে। তাদের ধর্মীয় আচার-রীতি আমার অনেক ভালো লাগতে থাকে বিশেষ করে জুমুয়ার দিনে নামাজে যাওয়া। ওদের সাথে শুক্রবারে যখন ক্রিকেট খেলতাম তখন আজান হলে ওদের বলতাম "তোরা আজকে নামাজে যাবি না। শুক্রবারের একটা দিন যা নামাজে যা। এইভাবে সময় কেটে যায়। ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর আমার দাদিমা মারা যান। তারপর আমি একদিন স্বপ্ন দেখি আমার দাদিমা একটা আগুনের স্তুপের উপর বসে আছেন আর আমাকে বলছেন," আমি ভালো নেই"। এই ব্যাপারটা দেখে আমি অনেক ভয় পাই। বাবা-মা'কে এই ব্যাপারে বললে উনারা তা এড়িয়ে যান।তারপর মনে হতে থাকে আমরা সবাই ভুল পথে আছি। মাঝে মাঝে আমার মুসলিম বন্ধুরা বলত যে,"তোমরা কাদের সামনে মাথা নত কর? নিজেরাই তৈরি করে আবার নিজেরাই ধ্বংস করো।" এই কথা গুলো আমাকে ভাবিয়ে তোলে। আমি মাঝে মাঝে আকাশে তাকিয়ে থেকে বলতাম যে,"এই পৃথিবীর যদি কোনো প্রকৃত স্রষ্টা থেকে থাকেন তাহলে তিনি যেন আমাকে সঠিক পথ দেখান। এগুলো বলে মাঝে মাঝে চোখে পানি এসে যেত। তারপর আরো সময় গড়িয়ে যায়। যখন আমি উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হই তখন শুরু হয় করোনা মহামারি। ক্লাসগুলো সব অনলাইনে নেওয়া হয়। তখন পরিবার থেকে আমাকে এন্ড্রয়েড ফোন কিনে দেয়। তখন মাঝে মাঝে ইউটিউব/ফেইসবুক স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ সামনে সাবটাইটেলওয়ালা কুরআন তিলওয়াত আসতো। ওগুলো শুনতাম আর অনুবাদগুলো পড়তাম। মাঝে মাঝে গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যেত,চোখে পানি এসে যেত। বিশেষ করে সুরা আদ-দুখান আর ওয়াকিয়া'র তিলওয়াত। তারপর ইসলামের প্রতি ভালো লাগা তৈরি হয়। এরপর আমি ডা: জাকির নায়েক হাফিজাহুল্লাহ -এর লেকচার দেখি। বিশেষ করে কল্কি অবতার সম্পর্কে কল্কিপুরাণ ও ভবিষ্যৎপুরাণে ভবিষ্যৎ বাণী নিয়ে যে পর্বটা আছে ওইটা। এরপর আমি মনস্থ করি আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করব।তারপরে বেলা ফুরাবার আগে এবং ফেরা এবং ফেরা ২ নামের দুইটি বই পড়ি যা আমাকে আরো সাহসের যোগান দেয়।এরপর আমি আমার একজন গ্রামের ভাই যিনি ইসলাম প্র্যাক্টিস করতেন উনার সাথে যোগাযোগ করি। সব খুলে বলি। উনি আমাকে আশ্বাস দেন যে,উনি আমাকে সাহায্য করবেন।পরে উনার সহযোগিতাই আমি বগুড়া নোটারী পাব্লিকে গিয়ে হলফনামা তৈরি করি ৫ এপ্রিল,২০২২ এবং বাড়িতে আমি ইসলামের ব্যাপারটা জানালে উনারা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।তারপর ওই ভাই আমাকে একটি বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। ওইখানে থেকে আমার পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছিল। তাই আমার কলেজের বন্ধুরা মিলে আমাকে সরকারি আজিজুল হক কলেজ,বগুড়ার উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রদের একটু আবাসিক হল(ফখরুদ্দিন আহমদ হলে) নিয়ে আসে এবং আমার ফ্রিতে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। এরপর ওখানে থেকেই আমার পড়াশুনা চলে। আলহামদুলিল্লাহ ভালো রেজাল্টের সাথে আমি এইচএসসি পাস করি তারপর আমার ব্যাচমেট ও জুনিয়রদের সহায়তায় আমার পড়াশুনা চালিয়ে যাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতি নিতে থাকি। তারপর আলহামদুলিল্লাহ। আমি যেখানে যেখানে পরীক্ষা দেই, সব জায়গাতেই চান্স হয়। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত আছি। এই হলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার গোলামের জীবনকাহিনি। |
| আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় এমন অপশন গুলো সিলেক্ট করুন |
নওমুসলিম |
| কোন মাজহাব অনুসরণ করেন? |
হানাফি |
| নজরের হেফাজত করেন? |
চেষ্টা করি |
| দ্বীনি ফিউচার প্ল্যন কি আপনার? |
আলহামদুলিল্লাহ, আমার প্রধান লক্ষ্য একজন দাঈ হওয়া। ইসলামের সৌন্দর্যকে সবার কাছে পৌছে দেওয়ার চেষ্টা করা। বিশেষ করে যারা অমসুলিম আছে। তাদের যখন দেখি বা তাদের কথা যখন ভাবি, বুকের ভিতর মুচড়ে উঠে। মনে হয়, আমারই বন্ধু,ভাই,বোনেরা শুধু সঠিক দ্বীন না মানার জন্য, এক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ব্যতীত অন্য কারো ইবাদতের কারণে জাহান্নামে যাবে। এগুলো ভেবে অনেক কষ্ট হয়। আমার প্রধান লক্ষ্যই তাদের দ্বারে দ্বারে ইসলামের দাওয়াহ নিয়ে যাওয়া। ভাই, বন্ধু বলে বুকে টেনে নিয়ে তাদের বুঝানো। ইন শা আল্লাহ। আরো পরিকল্পনা আছে যে, ভবিষ্যৎ আমি যখন একটু বেশি ইনকাম করবো তখন আমার ইনকামের একটা অংশ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার রাস্তায় দাওয়াতি কাজ ব্যয় করব। ইন শা আল্লাহ। |
| অবসর সময় কিভাবে কাটান? |
বই পড়ি। |
| বাড়িতে কি কি দায়িত্ব আপনি পালন করে থাকেন? |
বাড়ি নাই। তাই দায়িত্বও নাই। তবে বাবা-মায়ের সাথে এখন চান্স পাওয়ার পর একটু যোগাযোগ হয়, মাঝে মাঝে টিউশনির বাড়তি টাকাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। উনারা নেন। |
